আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানাবে এবং শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে বলে তিনি আশাবাদী। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
টবি ক্যাডম্যান জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের পর বাংলাদেশ যদি তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানায়, তবে ভারতের উচিত সেই অনুরোধের প্রতি সম্মান জানানো। তিনি বলেন, যদি তাকে ফেরত পাঠানো সম্ভব না হয়, তবে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার কথা বাংলাদেশ সরকার বিবেচনা করতে পারে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহযোগিতা নেওয়ার বিষয়টিও ভাবা যেতে পারে।
ট্রাইব্যুনালের আইনের সাম্প্রতিক সংশোধনের প্রশংসা করে ক্যাডম্যান বলেন, এটি সঠিকভাবে হয়েছে। তবে আরও কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে, যা নিয়ে তারা সম্মিলিতভাবে প্রস্তাবনা দেবেন। এর মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া আরও কার্যকর এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উপযোগী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অনেক দেশ আপত্তি জানায়। তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন উল্লেখ করে ক্যাডম্যান বলেন, এ বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুঝতে হবে। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, এবং এটি বিদেশি কোনো দেশের উপর নির্ভর করে না।
টবি ক্যাডম্যান বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। লন্ডনভিত্তিক গার্নিকা ৩৭ ল’ ফার্মের যুগ্ম প্রধান হিসেবে তিনি চিফ প্রসিকিউটরকে আন্তর্জাতিক অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি বাংলাদেশ সফর করেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।