বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি দেশের সব ব্যাংক, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে, যার মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর পরিশোধের খরচ কমানো হয়েছে। এই নতুন পদক্ষেপটি আয়ের বিভিন্ন উৎস থেকে আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় খরচ কমিয়ে দেবে।
নতুন নির্দেশনাটি অনুযায়ী, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, বিকাশ, নগদ, রকেট বা অন্যান্য এমএফএস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধ করলে লেনদেনের জন্য নেয়া মাশুলের পরিমাণ অনেক কমানো হয়েছে। এখন থেকে:
এর আগে, ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধের জন্য ১.৬ শতাংশ মাশুল নির্ধারণ করেছিল। তবে, এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) পক্ষ থেকে এই মাশুল অত্যধিক হওয়ার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তা কমানোর অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
এনবিআরের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, “এনবিআরের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে গ্রাহকদের খরচ কিছুটা কমে।”
এনবিআরের চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, উচ্চ মাশুলের কারণে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে আয়কর পরিশোধে বাধার সম্মুখীন হচ্ছিল করদাতারা, যার ফলে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে পড়েছিল। তাই, এই মাশুল কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এছাড়া, চলতি ২০২৪-২৫ কর বছরের জন্য এনবিআর ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের পদ্ধতি উন্মুক্ত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় এই পদ্ধতিটি সহজতর এবং দ্রুততর করার চেষ্টা চলছে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে এখন টিআইএন (Taxpayer Identification Number) এবং বায়োমেট্রিক মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা যাবে।
এনবিআরের সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে প্রায় ১৫ লাখ করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ইতিমধ্যে সারা দেশে সরকারি কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা, মোবাইল কোম্পানির কর্মকর্তা, এবং কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের (যেমন ইউনিলিভার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ম্যারিকো, বার্জার পেইন্টস, নেসলেস) কর্মীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
করদাতাদের সহজ সেবা প্রদান করতে এনবিআর একটি কল সেন্টারও চালু করেছে, যেখানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সহায়তা পাওয়া যাবে। কল সেন্টারের নম্বর হচ্ছে ০৯৬৪৩৭১৭১৭১।